তেরখাদা উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে চিত্রা নদীর ওপর নির্মিত একমাত্র কাঠের সেতুটি দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। সংস্কারের অভাবে সেতুটি এখন চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ফলে প্রতিদিন চরম ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করতে বাধ্য হচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও শিক্ষার্থীরা।
উপজেলা পরিষদের লাগোয়া ৩৮ নম্বর তেরখাদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে অবস্থিত এই কাঠের সেতুটি স্কুলের প্রায় ৩০০-৪০০ শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবকসহ হাজারো সাধারণ মানুষের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেতুর অধিকাংশ তক্তা নেই, অনেক জায়গায় লোহার খুঁটি ও জোড়া আলগা হয়ে পড়েছে। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, পুলটি এতটাই দুর্বল হয়ে গেছে যে, শিশু, নারী কিংবা বয়স্কদের জন্য পার হওয়া অত্যন্ত বিপজ্জনক। বিশেষ করে বর্ষাকালে কাঠের তক্তাগুলো পিচ্ছিল হয়ে পড়ে, তখন পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয় এ পথ ধরে।
স্থানীয় ইমন মোল্লা জানান, “কদিন আগে এক স্কুলছাত্র পুল থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হয়। এই দুর্ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়, কতটা বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে এই কাঠের সেতুটি।”
শুধু শিক্ষার্থীরাই নয়, তেরখাদা উপজেলা পরিষদ, হাসপাতাল, সরকারি বিভিন্ন দপ্তর এবং তেরখাদা বাজারে যাতায়াতকারী সাধারণ মানুষও এই পুলের ওপর নির্ভরশীল। কৃষকেরা তাদের উৎপাদিত ধান, সবজি এবং নিত্যপণ্য নিয়ে আসা-নেওয়ায় পড়ছেন বড় ধরনের সমস্যায়।
বিদ্যালয়ের ছাত্রী পান্না সাহা ও লামিয়া খাতুন জানায়, “স্কুলে যেতে প্রতিদিন এই পুল পার হতে হয়। পা ফসকে পড়ে যাওয়ার ভয় থাকে সবসময়। তবুও উপায় নেই।”
এলাকাবাসীর দাবি,পূর্বে একাধিকবার সেতুটি মেরামতের জন্য বরাদ্দ এলেও যথাযথ সংস্কার হয়নি। তারা জানান, শুধু কাঠ দিয়ে দায়সারা মেরামত করে আবার ফেলে রাখা হয়েছে। এখন সময় এসেছে পুরোপুরি একটি নতুন ব্রিজ নির্মাণের।
উপজেলা প্রকৌশলী ভাস্কর মৃধা বলেন, “আমরা খুব শিগগিরই সরেজমিনে গিয়ে সেতুর অবস্থা পর্যালোচনা করবো। প্রয়োজনীয় প্রতিবেদন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পাঠিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করা হবে।”
জনস্বার্থে এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে জরুরি ভিত্তিতে সেতুটি মেরামত বা নতুন করে একটি সেতু নির্মাণের জোর দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
খুলনা গেজেট/এসএস